চীন থেকে উড়ে আসা হলদে বর্ণের ধূলিকণার সঙ্গে করোনা ভাইরাসও আসতে পারে আশঙ্কায় নাগরিকদের ঘরে থাকতে সতর্ক করে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। সরকারি এ সতর্ক বার্তার পর দেশটির রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের রাস্তাঘাট কার্যত জনশূন্য হয়ে পড়ে। বিবিসি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হলেও সীমান্ত লাগোয়া উত্তর কোরিয়া ভাইরাসটিতে কোনো নাগরিকই আক্রান্ত হননি বলে দাবি করে আসছে। করোনার সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত জানুয়ারিতে উচ্চ সতর্কতা জারির পাশাপাশি চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ এবং মানুষের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে উত্তর কোরিয়া।
মৌসুমি ধূলিকণার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা জানা যায়নি। তবে শুধু উত্তর কোরিয়াই প্রথম দেশ হিসেবে ধূলিকণার কারণে নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিষয়টি তেমন নয়। ধূলিকণার মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তারের শঙ্কায় নাগরিকদের মাস্ক পরার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে তুর্কমেনিস্তানও। এ দেশটি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব উত্তর কোরিয়ার মতো লুকানোর চেষ্টা করেনি।
রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল টেলিভিশন (কেসিটিভি) বিশেষ আবহাওয়া সতর্কবার্তা সম্প্রচার করেছে বুধবার। এতে আগামী কয়েকদিন দেশটিতে হলুদ বর্ণের ধূলিকণার প্রবাহের ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশজুড়ে বাড়ির বাইরের নির্মাণ কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়।
হলদে বর্ণের ধূলিকণা সাধারণত প্রত্যেক বছরই নির্দিষ্ট কিছু সময় মঙ্গোলীয় এবং চীনা মরুভূমি অঞ্চলগুলো থেকে উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে ধেয়ে আসে। বিষাক্ত ধূলিকণার সঙ্গে মিশে যাওয়ায় বছরের পর বছর ধরে দুই দেশেই স্বাস্থ্য উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে হলদে ধূলিকণা।
উত্তর কোরিয়ার সরকারের মুখপত্র দ্য রোডং সিনমুন এক প্রতিবেদনে দেশের সব কর্মীকে দূষিত ভাইরাসের আক্রমণের ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়। দেশটিতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসও পিয়ংইয়ংয়ের এ ধূলিকণার সতর্কবার্তা পেয়েছেন। পিয়ংইয়ংয়ে নিযুক্ত রাশিয়ার দূতাবাস ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেছে, উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রুশ এবং অন্যান্য কূটনৈতিক মিশন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দেশটিতে ধূলিঝড়ের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটিতে অবস্থানরত সব বিদেশি নাগরিককে বাড়িতে অবস্থান এবং ঘরের জানালা শক্তভাবে বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিডিসি) বলছে, বাতাসে কয়েক ঘণ্টা ধরে ভাসমান অবস্থায় থাকতে পারে করোনা ভাইরাস। তবে বাতাসে ভেসে থাকা ভাইরাসে মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল।
Leave a Reply